
প্রেমিকের হুমকিতে ভিডিও ফুটেজ পাঠিয়ে কিশোরীর আত্মহত্যা
সিলেট ব্যুরো
প্রেমিকের হুমকিতে অপমান সইতে না পেয়ে আবেদা সুলতানা নামে এক কিশোরী ভিডিও ফুটেজ পাঠিয়ে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার বিকালে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থানার পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরীর লাশ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
মৃত আবেদা সুলতানা (১৬) তাহিরপুরের উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের সুন্দরবন গ্রামের মৃত সায়েদ মিয়ার মেয়ে।
বুধবার রাতে তাহিরপুর থানার এসআই মো. ইমরান তালুকদার বিষপানে কিশোরী আবেদা সুলতানার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
উপজেলার সুন্দরবন গ্রামের মৃত সায়েদ মিয়ার স্ত্রী ও মৃত কিশোরীর মা রহিমা খাতুন যুগান্তরকে বলেন, উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের ফানিয়াখালি গ্রামের আব্দুর নুরের ছেলে তাবরিজ মিয়া ওরফে তানভিরের সঙ্গে কিশোরী আবেদা সুলতানার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে বছরখানেক ধরে। প্রেমের সম্পর্ক ছিন্ন করতে ১০-১২ দিন পূর্বে সুন্দরবন গ্রামের বাড়িতে এসে আবেদাকে মারপিট করে তাবরিজ। এরপর সরাসরি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক মেসেঞ্জারে ভয়েস পাঠিয়ে আবেদা ও তার ১৪ বছর বয়সি সহোদর ভাইকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছিল তাবরিজ।
প্রেমিকের মারপিটের কারণে অপমান সইতে না পেরে ও প্রাণনাশের হুমকির কারণে বুধবার বেলা ১১টার পর নিজ বাড়ির শয়ন কক্ষে কিশোরী আবেদা বিষপান পান করেন।
আত্মহননের পূর্বে বিষের বোতলসহ প্রেমিক তাবরিজকে দায়ী করে ‘দুনিয়াতে বাঁচার খুব ইচ্ছা ছিল তুমি আমায় বাঁচতে দাওনি'- এমন সব কথা বলে নিজে একটি ভিডিও ধারণ করেন কিশোরী আবেদা। ওই ভিডিও ফুটেজ তাবরিজকে পাঠানোর পরপরই আবেদা বিষপানে আত্মহত্যা করেন।
মৃত কিশোরীর মা আরও বলেন, বেলা ১১টার দিকে আবেদাকে বাড়িতে রেখে বাড়ির পাশে পাহাড়সংলগ্ন এলাকায় গরুকে ঘাস খাওয়াতে যাওয়া ছোট ছেলের জন্য আমি ভাত নিয়ে যাই।
এরপর পাড়ার লোকজন খবর দেয় আমার মেয়ে বিষপান করেছে। দ্রুত তাকে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই চিকিৎসার জন্য। চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তাবরিজ প্ররোচনা দিয়ে আবেদাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে বলে দাবি করেন মা রহিমা খাতুন।
এ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে তাবরিজের ব্যক্তিগত দুটি মোবাইল ফোন নাম্বারে কল করা হলেও ফোন দুটি বন্ধ পাওয়া যায়।
তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মির্জা রিয়াদ হাসান বলেন, কীটনাশক পান করায় হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই ওই কিশোরী মারা গেছেন।