
পিরোজপুরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোথাও কর্মবিরতি, কোথাও চলছে ক্লাস
পিরোজপুর প্রতিনিধি
পিরোজপুরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে অলস সময় পার করছে শিক্ষার্থীরা। তিন দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করছেন। এই কর্ম বিরতির কারণে বিদ্যালয় গুলোতে শিক্ষার্থীরা পাঠদানের উদ্দেশ্যে আসলেও ক্লাসে পাঠদান দিচ্ছেন না সহকারি শিক্ষকরা। ফলে শিক্ষার্থীরা শ্রেণি কক্ষে হৈইহুল্লর করে সময় কাটাচ্ছে। অভিভাবকরা বলছে এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার অনেক ক্ষতি হবে। তবে জেলার অনেক স্কুলের শিক্ষকরা কোন কর্মসূচি পালন করেছেন না।তারা নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছেন।
সহকারী শিক্ষক পদকে ‘এন্ট্রি পদ’ হিসেবে ধরে ১১তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন, শতভাগ পদোন্নতি দিয়ে প্রধান শিক্ষক পদে দ্রুত পদোন্নতির সুযোগ নিশ্চিত করার তিন দফা দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, পিরোজপুর জেলার সাত উপজেলায় মোট প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৯৮৯ টি। যেখানে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন ৪ হাজার ৪৭২ জন। বিদ্যালয় গুলোতে শিক্ষার্থী আছে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬৩০ জন।
পিরোজপুরের বেশ কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা সঠিক সময় শ্রেণী কক্ষে আসলেও সহকারী শিক্ষকরা তাদের পাঠদান দিচ্ছে না। শিক্ষার্থীরা শ্রেণী কক্ষে হৈহুল্লোড় করে সময় কাটাচ্ছে, এক ক্লাস থেকে অন্য ক্লাসে ছোটাছুটি করছে। কেউ খেলাধুলা করছে, কেউ ছবি আঁকছে, আবার কেউ দেয়ালে কার্টুন আঁকছে। এদিকে শিক্ষাকদের কক্ষের সামনে ব্যানার নিয়ে কর্মবিরতি পালন করছে সহকারী শিক্ষক। তারা বলছে দাবি মেনে নেওয়া না পর্যন্ত এভাবেই কর্ম বিরতি চলমান থাকবে। এমনকি ভবিষ্যতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে কঠোর কর্মসূচি পালন করবে। তবে বুধবার দুপুরে কাউখালী উপজেলার হোগলা বেতকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় সহকারী শিক্ষকরা যথা নিয়মেই শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিচ্ছেন।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষা সমাজের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলার ৪২ নং পান্তা ডুবি-১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ সাইদুল হক মামুন বলেন, তারা তাদের যৌক্তিক দাবিতে পাঠদান থেকে বিরত থেকে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করছেন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা তাদের কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন।
পিরোজপুর সদর উপজেলার ৭৮ নং কাশেফুল উলুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ নাজমুল হুদা মিথুন বলেন, প্রথম থেকেই আমরা কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী কর্ম বিরতিতে অংশ নিচ্ছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন চলমান থাকবে।
কাউখালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও হোগলা বেতকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ হাবিবুল্লাহ ফকির বলেন, কেন্দ্র ঘোষিত তিন দফা দাবির কর্মসূচিতে আমরাও একমত। তবে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা কর্মবিরতি পালন করছি না। বিশেষ করে আমার স্কুলে প্রথম দিন থেকে কর্মবিরতির কোন কর্মসূচি পালন করা হয়নি।
কাউখালী মডেল সরকারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুব্রত রায় বলেন, সহকারী শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে আসছেন তবে পাঠদান করছেন না। যদিও তাদের দাবিগুলো যৌক্তিক তবে পাঠদান না করায় বিদ্যালয়ের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (চঃ দাঃ) মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বলেন, পিরোজপুর জেলার সহকারী শিক্ষকদের ক্লাস নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। শিক্ষকরা তাদের আন্দোলনের সাথে আছে, তবে কোমলমতি শিশুদের স্বার্থে অনেক স্কুলে তারা শিশুদের পাঠদান করাচ্ছেন।
মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন
আপনি ও পছন্দ করতে পারেন
সর্বশেষ
জনপ্রিয়
আর্কাইভ!
অনুগ্রহ করে একটি তারিখ নির্বাচন করুন!
দাখিল করুন