
পর্যটকশূন্য কুয়াকাটা, প্রকৃতির অপরূপ সাজ
সৌমিত্র সুমন, পায়রা বন্দর (পটুয়াখালী)
রমজানের শুরু থেকেই পর্যটকশূন্য কুয়াকাটা সৈকত যেন নতুন রূপে সেজেছে। প্রকৃতি ফিরে পেয়েছে তার নিজস্ব সৌন্দর্য। সৈকতের কাউয়ার চর ও মিরা বাড়ি পয়েন্টে বেড়েছে অতিথি পাখির আনাগোনা, তাদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে চারদিক।
চর গঙ্গামতি সৈকতে ছড়িয়ে রয়েছে হাজারো ঝিনুকের খোলস, বালুচরের বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে সাদা আস্তরণ। এ যেন এক নৈসর্গিক দৃশ্য। সৈকতের পূর্ব পাশে ক্র্যাব আইল্যান্ডে লাল কাঁকড়ার অবাধ বিচরণ চোখে পড়ার মতো। বালুর উপর তাদের আঁকিবুঁকি আর ছুটোছুটি মন কাড়বে যেকোনো প্রকৃতিপ্রেমীর।
এছাড়াও সৈকতসংলগ্ন সংরক্ষিত বনে বেড়েছে আকন্দসহ বিভিন্ন ঔষধি গাছ ও বনজ গাছপালা। গাছের ডালে নতুন ফুলের বাহারি রঙ আর সুগন্ধ ছড়িয়ে দিচ্ছে এক মোহনীয় আবহ। বর্ষার আগমনী বার্তায় সমুদ্রের ঢেউও যেন আরও বর্ণিল হয়ে উঠেছে।
কুয়াকাটার মোটরসাইকেল চালক ইব্রাহিম হোসেন জানান, "পর্যটক কম থাকায় সৈকতে আমাদের চলাচলও কমে গেছে। তবে গতকাল খুলনা থেকে একজন পর্যটক এসেছিলেন, তাকে পুরো সৈকত ঘুরিয়ে দেখিয়েছি। মনে হয়েছে প্রকৃতি যেন নিজের স্বাভাবিক রূপে ফিরেছে। বেড়েছে অতিথি পাখি, লাল কাঁকড়া ও ঝিনুকের সংখ্যা।
স্থানীয় জেলে রহমান মিয়া বলেন, "গঙ্গামতি সৈকতে প্রচুর পরিমাণে ঝিনুকের খোলস ভেসে এসেছে। এটি সত্যিই দারুণ দৃশ্য।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন রাজু জানান, "রমজান মাসে পর্যটকের সংখ্যা কম থাকায় সৈকতের প্রকৃতি তার নিজস্ব সৌন্দর্যে ফিরেছে। লাল কাঁকড়া ও অতিথি পাখির সংখ্যা বেড়েছে, পাশাপাশি সংরক্ষিত বনের গাছে নতুন ফুল ফুটেছে। ঈদের পর আসা পর্যটকরাই এই নয়নাভিরাম দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন।"
কুয়াকাটা টুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক আহাদুজ্জামান বলেন, "ঈদের পর কুয়াকাটায় লাখো পর্যটকের আগমন ঘটবে। সৈকতের এই নতুন রূপ তারা উপভোগ করতে পারবেন। আগত পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
পর্যটকশূন্য কুয়াকাটায় প্রকৃতির এই অপরূপ সাজ যেন প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। ঈদের পর কুয়াকাটা আবারও মুখর হয়ে উঠবে পর্যটকদের পদচারণায়, তবে এখনকার এই শান্ত, নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ কেবল প্রকৃতির আপন বাসিন্দাদেরই।