
নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের পিপিআর শর্ত ভঙ্গ করে বিল পরিশোধ সংক্রান্ত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আবুল বাসার
নিজস্ব প্রতিবেদক
“নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের পিপিআরে শর্ত ভঙ্গ করে বিল পরিশোধ” শিরোনামে ১৩ জুন দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার অ্যান্ড শিপ সার্ভেয়ার এন্ড এক্সামিনার ও EGIMNS প্রকল্প পরিচালক মোঃ আবুল বাসার।
প্রতিবাদলিপিতে তিনি বলেন প্রকাশিত সংবাদ সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও হয়রানিমূলক। তিনি বলেন, প্রতিবেদনে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে আমার সম্পর্কে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, বিভ্রান্তিকর এবং সম্মানহানিকর।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে আমি নাকি পাবলিক প্রোকিউরমেন্ট রুলস (PPR) ভঙ্গ করে ঠিকাদারদের বিল পরিশোধ করেছি—এ দাবি সম্পূর্ণরূপে অসত্য। আমি ১১ নভেম্বর ২০২৪খ্রি তারিখে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহন করার পূর্বেই প্রকল্পের প্রায় সকল কাজ সম্পাদিত হয়েছে এবং অধিকাংশ বিলই পরিশোধ করা হয়েছে। আমার দায়িত্ব পালনকালে প্রকল্পের সকল ব্যয় ও বিল পরিশোধ সরকারি বিধি-বিধান, আর্থিক সংস্থাপন এবং নিরীক্ষা নির্দেশিকা অনুসরণ করেই সম্পন্ন হয়েছে। এর প্রত্যেকটি লেনদেন যথাযথ যাচাই ও অনুমোদনের মাধ্যমে হয়েছে, যার রেকর্ড সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সংরক্ষিত রয়েছে। এছাড়া, আমার ব্যক্তিগত জীবন, আচার-আচরণ ও শৃঙ্খলা সম্পর্কে যেসব কুৎসা রটানো হয়েছে, তার কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই। উল্লেখ্য, সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে আমি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলাম যা চরম মিথ্যাচার প্রকৃতপক্ষে আমি ছাত্র জীবনে ছাত্রলীগ তথা কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে কখনোই সম্পৃক্ত ছিলাম না। আমার বাবাকে মুদির দোকানদার ঊল্লেখ করে আমার সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে অথচ আমার বাবা একজন সৎ সরকারী কর্মচারী হিসেবে সুনামের সাথে চাকুরী শেষ করে অবসর গ্রহণ করেন। সংবাদে আরো বলা হয়েছে আমি জাহান মনি জাহাজে সমুদের পানি দ্বারা ইঞ্জিন কুলিং করে ইঞ্জিনের ক্ষতিসাধন করেছি, প্রকৃতপক্ষে ঐ জাহাজে আমার দক্ষতার জন্য ২৫ জন নাবিকের জীবন সুরক্ষিত হয়। এছাড়া, আমার ব্যাক্তিগত চরিত্র বর্ণনায় আরো যা উল্লেখ করা হয়েছে তা সবই বানোয়াট ও মিথ্যা।
তিনি বলেন, এধরনের মনগড়া ও মানহানিকর বক্তব্য প্রকাশের ফলে আমার ব্যক্তিগত এবং পেশাগত সম্মান মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয়। স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে গণমাধ্যম দেশে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে অসাধারণ ভূমিকা পালন করে থাকে। গণমানুষের আর্তচিৎকার ও সমস্যা সমাধানের রূপরেখা তুলে ধরতে নীতিবান সাংবাদিক সমাজ অনন্যসাধারণ প্রভাব বিস্তার করে থাকেন। কিন্তু হলুদ সাংবাদিকতা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ যা কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থে পরিবেশন করে নিরাপরাধ মানুষের সুনামহানি করে সেসব অবশ্যই দুর্ভাগ্যজনক ও নিন্দনীয়। আমি দৃঢ়ভাবে মনে করি, এই প্রতিবেদনটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তৈরি করা হয়েছে এবং কোনো সত্যতা যাচাই না করেই প্রকাশ করা হয়েছে, যা একটি দায়িত্বশীল সংবাদমাধ্যমের নীতিমালার পরিপন্থী।
প্রকাশিত সংবাদে সাংবাদিকতার সাধারণ নীতি, নৈতিকতা, কোড অব কন্ডাক্ট অনুসরণ ব্যতীত আমার বক্তব্য শ্রবণ না করে মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে যা আমার পারিবারিক ও সামাজিক জীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। যথাযথভাবে তথ্য যাচাই-বাছাই না করে সংবাদ পরিবেশন করা অবিবেচনাপ্রসূত ও অনভিপ্রেত। একটি বানোয়াট, কাল্পনিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ যা ভিন্ন ভিন্ন শিরোনামে ভিন্ন ভিন্ন সাংবাদিকের নামে (মূল সংবাদ একই রেখে) ভিন্ন ভিন্ন দিনে প্রকাশ করা স্পষ্টভাবে এই বার্তা দেয় যে, মহান সাংবাদিকতা পেশায় কিছু অপেশাদার লোকের অনুপ্রবেশ ঘটেছে যারা সাংবাদিকতা পেশার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবান পেশাকে কৌতুকে পরিণত করে ব্যক্তিগত ফায়দা হাসিলে ব্যস্ত রয়েছে।
জনাব আবুল বাসার প্রকাশিত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এবং উক্ত সংবাদ প্রত্যাহার করে প্রতিবাদলিপিটি প্রকাশের অনুরোধ জানান ইনকিলাব সম্পাদককে ; অন্যথায়, মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনের বিষয়ে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল এর মাধ্যমে উপযুক্ত আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান ।
বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল কর্তৃক ১৯৯৩ সালে প্রণীত আচরণবিধির বিধি ১৭ অনুযায়ী প্রতিবাদপত্রটি প্রকাশিত সংবাদের মতো সমগুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করার অনুরোধ জানান তিনি।