
নির্বাচনের সঙ্গে সংস্কার ও আ.লীগের বিচার মেলানোর সুযোগ নেই: বিএনপি
স্টাফ রিপোর্টার
নির্বাচনের সঙ্গে সংস্কার ও আওয়ামী লীগের অপরাধের বিচার মেলানোর কোনো যৌক্তকতা নেই বলে দাবি করেছেন বিএনপি নেতারা। নির্বাচনের পর ক্ষমতায় গেলে বিএনপিই এসব করবে বলে তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ ছাড়া শেখ হাসিনার পতনে সবচেয়ে বড় অবদান খালেদা জিয়ার বলেও দাবি করা হয়েছে।
বুধবার (২৮ মে) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশে বক্তারা এসব মন্তব্য করেন। এছাড়া ডিসেম্বরের মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়ার প্রতিও জোর দিয়েছে বিএনপি।
সমাবেশে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কোনো হেলাফেলা চলবে না। সংস্কার এবং বিচারের কথা বলে নির্বাচনের রোডম্যাপ পেছানোর কোনো সুযোগ নাই। বিএনপির আগে কেউ সংস্কারের কথা বলেনি। সবার আগে খালেদা জিয়া জাতির সামনে সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরেছেন।’
‘দুই বছর আগে বিএনপিই ২৭ দফা সংস্কারের দাবি জানিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশের জনগণ। ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে এ সংস্কার হবে না,’ যোগ করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের বিচার প্রসঙ্গে খসরু বলেন, ‘শেখ হাসিনার পতনে সবচেয়ে বড় অবদান খালেদা জিয়ার। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি থেকেছেন আপসহীন, আর তারেক রহমান তার নিরলস কাজের মাধ্যমে এই আন্দোলনে স্বৈরাচার পতনের পথ খুলে দিয়েছেন।’
‘বিএনপির মতো এত কঠিন সময় কেউ অতিক্রম করেনি, বিএনপির নেতাকর্মীদের মতো এতটা ক্ষতিগ্রস্থ কেউ হয়নি। আওয়ামী লীগের বিচার যদি করতে হয়, সেই বিচার বিএনপি করবে।’
এ সময়ে নির্বাচনের রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, কারও পদত্যাগ চাইনি বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘আমরা ডিসেম্বরে নির্বাচনের জন্য রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, কারও পদত্যাগ চাইনি। পদত্যাগের নাটক দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ। গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য কথা বলা যদি অপরাধ হয়, সেই অপরাধ বিএনপি বারবার করতে পারবে।’
‘ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা চলছে। অত্যন্ত সুকৌশলে গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে। দেশে পরস্পরের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে ষড়যন্ত্রকারীরা ফ্যাসিবাদ ফিরিয়ে আনতে চায়।’
অন্তর্বর্তী সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার ছিল দেশের মানুষের আস্থা এবং আকাঙ্ক্ষার সরকার। কিন্তু এই নয় মাসে সরকার থেকে অবজ্ঞা ছাড়া আমরা আর কিছু পাইনি। সরকার দেশের মানুষকে অবজ্ঞা করছে। এই সরকার একটি ঔপনিবেশিক সরকার। যারা সরকারে আছেন, তাদের ৯০ ভাগই এ দেশের নাগরিক না।’
‘নয় মাসে যে সংস্কার সরকার করতে পারেনি; নয় বছরেও—এমনকি নব্বই বছর সময় দিলেও তারা পারবেন না। সরকারে এখন উচিত দেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে জনগণের প্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। সরকার যেভাবে দেশ চালাচ্ছে, তাতে করে আওয়ামী লীগ যা ক্ষতি করেছে—তার থেকে দেশের অনেক বেশি ক্ষতি হয়ে যাবে,’ বলেন তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বলেন, দেশে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয় নাই। তারা নির্বাচনকে বিলম্বিত করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। না হলে সংস্কার আর বিচারের সঙ্গে নির্বাচন মেলানোর কোনো কারণ দেখি না। এই সরকারের কাছে আমাদের কোনো প্রত্যাশা ছিল। সরকার জনগণের সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি।