
দোহারে উইভার্স কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিঃ এর নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ
দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধি
ঢাকার দোহার উপজেলার লটাখোলা চরজয়পাড়া উইভার্স কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ এর গত ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে অনুষ্ঠিত নির্বাচন সমবায় সমিতি আইন, ২০০১ (সংশোধিত-২০০২ ও ২০১৩) এর ৫০(১)(ঙ) ধারায় অনিয়ম হওয়ার অভিযোগ এনে নির্বাচন বাতিলের জন্য আগারগাঁও জেলা সমবায় কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দিতাকারী আবুল কালাম। যার সদস্য নং-৯৭৬।
আবুল কালামের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে টেবিল প্রতীকের প্রার্থী মো. দানেছ এর বিরুদ্ধে উইভার্স কো-অপারেটিভ সোসাইটির দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ৮৪ হাজার টাকার হিসাবে গড়মিল ও বিভিন্ন অনিয়মের রেকর্ড পত্র দাখিল করে গত ২৪ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মো. দানেছ এর প্রার্থীতা বাতিল চেয়ে নির্বাচন পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা কমিটি বরাবর আবেদন করেন। কিন্তু আবুল কালামকে আপিলের একটি আদেশ ধরিয়ে দেন। যেখানে অন্য একজন আবুল কালামের পরিচয় রয়েছে। যার সদস্য নং ৮৬১। এসকল অভিযোগের পরেও নির্বাচন পরিচালনা কমিটি দায়ভার এরিয়ে ২৪ আগস্ট ২০২৩ তারিখে সকল প্রার্থীতা বৈধ ঘোষণা করে নির্বাচনের আয়োজন করেন।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির দায়িত্ব পালন করেন দোহার উপজেলা সমবায় কার্যালয়ের সহকারী পরিদর্শক মো. মামুন অর রশীদ, সুমন দত্ত ও উইভার্সের সদস্য মো. নুরুল ইসলাম।অভিযোগ সুত্রে আরও জানা যায়, লটাখোলা চরজয়পাড়া উইভার্স কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি. এর নির্বাচন গত ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলার লটাখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ে সকাল ১০ থেকে বেলা ৩ টা পর্যন্ত ভোট গ্রহন করা হয়। ভোট গননাকালে মোট ১১ শ ৬৯ জন ভোটারের মধ্যে ৫শ ৭৪ জন ভোট প্রদান করে। ৫শ ৭৪ ভোট প্রদান ব্যালটের মধ্যে মোরক প্রতীকে আবুল কালাম পান ২৮৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. দানেছ টেবিল প্রতীকে পান ২৮৬ ভোট। নির্বাচন পরিচালনা কমিটি মোরক প্রতীকে প্রাপ্ত ২৮৮ ভোট থেকে ৪৮ টি ভোট বাতিল দেখিয়ে ২৪০ ভোট কাউন্ট করে এবং টেবিল প্রতীকের প্রার্থী মো. দানেছকে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করে।
এছাড়াও আবুল কালাম জানান, গত ৩ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে আগারগাঁও জেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. শিহাব উদ্দিন এর বরাবর গত ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচন বাতিলের আবেদন করেন। যার স্বারক ৩৪১৬।
এতে ৪৭ টি জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ৪৭টি জাল ভোটের মধ্যে ৯ জন মৃত ভোটার রয়েছে, ১৭ জন ভোটার বিদেশে অবস্থান করছে, ১৯ জন ভোটার কে জোরপূর্বক কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে এবং ২ জন রয়েছে নাবালক ভোটার।
তিনি আরও বলেন, আমি সমবায় সমিতির নির্বাচনে প্যানেল দেওয়ার নিয়ম নেই। কিন্তু দানেছ গংরা প্যানেল দিয়েছে। সেই প্যানেলের ২২ জন এজেন্ট দিয়েছেন। আমার মাত্র দুই জন এজেন্ট ছিলো। তারা কোনো কথা বলতে পারেনি। আমার ভোটারদেরকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ও জসিম- দানেছ প্যানেল উক্ত নির্বাচনকে প্রভাবিত, অনিয়ম ও পক্ষপাতিত্ব করেছে। আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নির্বাচন দেয়ার আবেদন জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির দায়িত্বে থাকা উপজেলা সমবায় কার্যালয়ের সহকারী পরিদর্শক মো. মামুন অর রশীদ ও সুমন দত্ত জানান, আমরা নিয়ম, নীতিমালা অনুসরণ করে নির্বাচনটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভাবে পরিচালনা করেছি। আমাদের দিক থেকে কোনো প্রকার পক্ষপাতিত্ব ও নিয়ম, নীতির বহির্ভূত কোনো কাজ করা হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে আগারগাঁও জেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. শিহাব উদ্দিন এর মুঠোফোনে বার বার কল দিয়েও যোগাযোগ করা যায়নি।