ডৌয়াতলার পুকুর-খাল ফিরে পেল নতুন জীবন
বামনা (বরগুনা) প্রতিনিধি
ডৌয়াতলা বাজারের এক সময়ের সুন্দর বড় পুকুরটি বছরের পর বছর ধরে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে ভরাট হয়ে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। পাশাপাশি, মাছের বাজার সংলগ্ন খালটিও আবর্জনায় প্রায় বুজে যাচ্ছিল। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে আজ সকালে ডৌয়াতলার পুকুর ও খালের অংশ পরিষ্কারে অনন্য এক উদ্যোগ নেয় বামনার ছাত্র-জনতা, বিডিক্লিনের বামনা উপজেলা টিম ও বরগুনা জেলা টিমের সহযোগিতায় এই কার্যক্রমে ডৌয়াতলার স্থানীয় ছাত্র ও তরুণরা সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।
সকাল ৯ টায় শুরু হওয়া এই কার্যক্রমে ডৌয়াতলা ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি ও নেতৃবৃন্দ সেখানে উপস্থিত হয়ে উৎসাহ প্রদান ও সহযোগিতা করেন। আয়োজনে উপস্থি ছিলেন ডৌয়াতলা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবু সালেহ, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জনাব রাশেদ খান মামুন, এবং সেতু বন্ধন মহিলা উন্নয়ন সংস্থার সভানেত্রী সংগঠক তানিয়া ফোরকান, ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম রাজা এবং ডৌয়াতলা বাজার কমিটির সেক্রেটারি।
উদ্যোগ গ্রহণকারী ছাত্র-জনতার পক্ষে সৈয়দ রাহবার আহসান বলেন, _”উপজেলা জুড়ে পরিচালিত বিভিন্ন কার্যক্রমের ধারাবাহিকতার এটিও একটি অংশ। আমাদের স্থানীয় প্রতিনিধিদের কাছ থেকে পুকুর ও খাল পরিষ্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা জানতে পেরে, বিডিক্লিনের সক্রিয় সহযোগিতায় ও প্রশাসনের অনুমোদনে আমরা এই উদ্যোগ গ্রহণ করি।”
তিনি আরও বলেন, _”ছাত্র-যুব সমাজের এই সাহসী পদক্ষেপ আমাদের সবার জন্য অনুপ্রেরণা। ছোট ছোট শিশুরাও এই কাজে অংশ নিয়েছে। আমরা চাই, সবাই নিজ নিজ এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে এমন উদ্যোগে যুক্ত হোক।”
ডৌয়াতলা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবু সালেহ উদ্যোগটিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, _”এটি একটি প্রশংসনীয় কাজ। ভবিষ্যতে যেন পুকুর ও খালে আর ময়লা ফেলা না হয়, সেজন্য বাজার কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সব সময় এই ধরনের কাজে পাশে থাকবে।”
ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জনাব রাশেদ খান মামুন বলেন, _”আমরা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। ছাত্র-যুব সমাজের এ ধরনের সামাজিক কার্যক্রমে আমার এবং ডৌয়াতলা ইউনিয়ন বিএনপির সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে।”
সেতু বন্ধন মহিলা উন্নয়ন সংস্থার সভানেত্রী তানিয়া ফোরকান বলেন, _”একজন সামাজিক সংগঠক ও মা হিসেবে আমি এমন উদ্যোগের পাশে আছি এবং সব সময় থাকব। আমি আমার সন্তানকেও পরিবেশ রক্ষার এই ধরনের কাজে উৎসাহিত করি।”
অনুষ্ঠানে স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম রাজা মিয়া বলেন,_”উদ্যোগটি সত্যিই অনুকরণীয়। তবে এই সফলতাকে ধরে রাখতে এবং বাজারের নিরাপত্তার স্বার্থে পুকুরের পানি ধারণক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রশাসনের কাছে পুনঃখননের দাবি জানাচ্ছি।”এই কার্যক্রমের মাধ্যমে পুকুর ও খাল পুনরুদ্ধার এলাকার পানি সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একইসঙ্গে, ভবিষ্যতে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধে বাজার কমিটি ও এলাকাবাসীকে সচেতন থাকার অনুরোধ করা হয়েছে। এই উদ্যোগ এলাকাবাসীর মধ্যে একতা, দায়িত্ববোধ এবং পরিবেশ সংরক্ষণের চেতনা জাগ্রত করেছে। ”নিজ এলাকা সুন্দর রাখতে এগিয়ে আসুন,”_—এই বার্তা ছড়িয়ে দেওয়াই এই উদ্যোগের অন্যতম লক্ষ্য।