ডার্ক মোড
Sunday, 15 June 2025
ePaper   
Logo
ট্রাম্পের আশঙ্কা ও সতর্কতার পরই ইরানে হামলা ইসরায়েলের

ট্রাম্পের আশঙ্কা ও সতর্কতার পরই ইরানে হামলা ইসরায়েলের

বিশ্ব সংবাদডেস্ক

গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রাচ্যে ‘বড় সংঘাতের সম্ভাবনা’র বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার মন্তব্যের পর রাত না পেরোতেই ইরানে হামলা করল ইসরায়েল।

বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলা অত্যন্ত সম্ভাব্য একটি বিষয়।

তবে এই সংঘাত এড়াতে চান উল্লেখ করে তিনি ইসরায়েলের প্রতি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা না চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান আলোচনায় তেহরান যদি আপস করে, তাহলে সমঝোতায় পৌঁছানোর অনেকটাই কাছাকাছি রয়েছে বলে নিজের ধারণার কথা জানান তিনি।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমি ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে চাই। আমরা চুক্তির বেশ কাছাকাছি চলে এসেছি...আমি বরং একটি চুক্তি চাই। এই চুক্তিকেই আমি বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি।’

‘যতক্ষণ পর্যন্ত আমি মনে করি যে চুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে, ততক্ষণ আমি চাই না যে তারা (ইসরায়েল) আগ বাড়িয়ে (ইরানে) ঢুকে পড়ুক। কারণ এর ফলে চুক্তিটি ভেস্তে যেতে পারে। যদিও এতে উপকারও কিছু হতে পারে, তবে পুরো বিষয়টিই নস্যাৎ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিও আছে।’

সবকিছুর উপরে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথেই হাঁটার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ইরানের কাছে কোনোভাবেই পরমাণু অস্ত্র থাকা চলবে না। তাছাড়া আমি চাই যে, তারা (আলোচনায়) সফল হোক। আমরা তাদের সঙ্গে বাণিজ্য করব, প্রয়োজনীয় সবকিছুই করব।’

তিনি আরও জানান, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইরানে হামলার বিষয়টি বিবেচনা করছেন। তবে এ ধরনের হামলা ‘বৃহৎ সংঘাতের’ জন্ম দিতে পারে বলেও সতর্ক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি এটিকে “অতি আসন্ন” বলতে চাই না, কিন্তু এটি ঘটার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।’

নিজেকে ‘শান্তির পক্ষের মানুষ’ হিসেবে বর্ণনা করে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমি সংঘাত এড়িয়ে যেতে চাই। ইরানকে আরও কঠোরভাবে আলোচনায় আসতে হবে। অর্থাৎ, এখন যে কয়েকটি বিষয়ে তারা একমত নয়, সেগুলোতে রাজি হতে হবে।’

পরে নিজের ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প আবারও ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার কথা জানান। তিনি লেখেন, ‘আমার পুরো প্রশাসনকে ইরানের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

‘ইরান একটি মহান দেশ হতে পারে, তবে আগে তাদের পরমাণু অস্ত্রের আকাঙ্ক্ষা পুরোপুরি ত্যাগ করতে হবে।’

এর আগে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ইসরায়েল খুব শিগগিরই ইরানে হামলার পরিকল্পনা করছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে তাদের দূতাবাস ও সামরিক ঘাঁটি থেকে বেশকিছু কর্মী ও কূটনীতিককে সরিয়ে নিয়েছে। সম্ভাব্য ইসরায়েলি হামলার আশঙ্কায় তারা দূতাবাসগুলোতেও সতর্কতা জারি করেছে।

ট্রাম্প বলেন, ‘ওই অঞ্চলে অনেক মার্কিন নাগরিক রয়েছেন। তারা যেন সরে যান, সে বিষয়ে আমি (দায়িত্বপ্রাপ্তদের) বলে দিয়েছি। কারণ, খুব শিগগিরই কিছু একটা ঘটতে পারে। আমি এমন একজন হতে চাই না, যিনি কোনো ধরনের সতর্কবার্তা না দিয়ে বসে থাকেন, তারপর ক্ষেপণাস্ত্র গিয়ে তাদের ভবনে আঘাত হানে। এটার সম্ভাবনা আছে কিন্তু!’

তবে ট্রাম্পের এসব মন্তব্যের মধ্যেই ইসরায়েলে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবি ইসরায়েলি গণমাধ্যম ওয়াইনেটকে বলেন, হোয়াইট হাউসের সম্মতি ছাড়া ইসরায়েলের ইরানে হামলা চালানোর সম্ভাবনা খুবই কম।

কিন্তু তার এই ধারণা আপাদমস্তক উল্টে দিয়ে শুক্রবার ভোরেই হামলা চালায় ইসরায়েল। পাঁচ দফায় ইরানের শতাধিক লক্ষ্যবস্তুতে চালানো হয়েছে এই হামলা।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন