ছয়তলার উপরে বেশিরভাগ আবাসিক-বাণিজ্যিক ভবন বিপদজনক না’গঞ্জে ৩ স্তরের অগ্নিনিরাপত্তা নেই
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, নারায়ণগঞ্জ
নারায়ণগঞ্জ মহানগরীতে বেশিরভাগ আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনে নেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। অগ্নিনির্বাপণ আইনের তোয়াক্কা না করে নগরীতে ইতোমধ্যে গড়ে উঠেছে শত শত আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন। অগ্নিনির্বাপণ আইনে পরিষ্কার বলা আছে- ছয়তলার উপরে ভবনের ক্ষেত্রে তিন স্তরের নিজস্ব স্থায়ী অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকতে হবে। এছাড়া বাণিজ্যিক ভবনের ক্ষেত্রে প্রথম তলা থেকে তিন স্তরের এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখার বিধান রয়েছে।
কিন্তু নারায়ণগঞ্জের বেশিরভাগ আবাসিক ভবনেই তিন স্তরের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। নিজস্ব অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা দূরে থাক, অনেক এলাকার সড়ক এত সরু, কোনো ভবনে দুর্ঘটনা ঘটলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশেরও সুযোগ নেই।
ফলে প্রতিবছর অগ্নিকাণ্ডে প্রচুর পরিমাণ সম্পদহানি হচ্ছে। এছাড়া প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। তবে বাণিজ্যিক ভবনের মধ্যে নিজস্ব অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা রয়েছে এমন ভবন খুঁজে পাওয়া মুশকিল। আবাসন নির্মাতারা জানান, বিদ্যমান অগ্নিনির্বাপণ আইন মেনেই তারা ভবন নির্মাণ করছেন।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, সাধারণত শীত মৌসুমে আগুন লাগার প্রবণতা খুবই বেশি থাকে। বিশেষ করে বছরের ১৬ নভেম্বর থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত সময়টিতে অগ্নি দুর্ঘটনা বেশি ঘটে। কারণ এই সময়ে আবহাওয়া খুব শুষ্ক থাকে। ফলে দ্রুত ছড়িয়ে যায় আগুনের শিখা। তাই নগরবাসীকে এই ব্যাপারে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, ফায়ার আইনে ছয় তলার উপরে আবাসিক ভবনের ক্ষেত্রে যদি ভবনের বাসিন্দা ৫০ থেকে ৫০০ জনের মধ্যে হয় তাহলে দুটি সিঁড়ি থাকতে হবে। এছাড়া বাসিন্দা ৫০০ থেকে এক হাজার জনের মধ্যে হলে তিনটি সিঁড়ি থাকতে হবে এবং এই সংখ্যা হাজারের বেশি হলে অবশ্যই চারটি সিঁড়ি রাখার বিধান রাখা হয়েছে। অন্যদিকে, ছয় তলার উপরে প্রতিটি ফ্লোরের জন্য লিফট আকারের ফায়ার সেফটি লবি থাকার কথাও আইনে বলা আছে। এছাড়া আবাসিক ভবনের নিচে ১ লাখ গ্যালন (সাড়ে ৪ লাখ লিটার) এবং ভবনের ওপরে ৫০ হাজার গ্যালন (২ লাখ ২৫ হাজার লিটার) পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
এছাড়া আইনে অগ্নি নির্বাপনে তিন স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে। প্রথম স্তরের মধ্য রয়েছে প্রত্যেক ৫৫০ বর্গফুটের জন্য একটি করে ফায়ার এক্সটিংগুইসার (অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র) রাখতে হবে। এটির ওজন ৫ কেজির কম নয় আবার ৮ কেজির বেশি নয়। দ্বিতীয় স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রয়েছে প্রতি ১০ হাজার বর্গফুটে একটি করে হোস রিলস (পানি চলাচলের পাইপ) এবং তৃতীয় স্তরে রয়েছে একটি হাইডেন কাম রাইজার, একটি ডিজেল চালিত পাম্প ও পানির চাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য জোকি মেশিন থাকতে হবে। অধিকাংশ আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনে প্রথম ও দ্বিতীয় স্তরের নিরাপত্তা বিধি মানা হলেও ব্যয় সংকোচনের জন্য মানা হচ্ছে না তৃতীয় স্তরের নিরাপত্তা বিধি। অথচ এটি সবচেয়ে বেশি