
কুমিল্লায় ধর্ষণ শিকার নারীর ভিডিও সামাজিকমাধ্যম থেকে সরাতে নির্দেশ
নিজ্বস প্রতিনিধি
কুমিল্লার মুরাদনগরের একটি গ্রামে বসতঘরের দরজা ভেঙে ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগী নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীর নির্যাতনের যে ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সামাজিকমাধ্যম থেকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (২৯ জুন) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের হাইকোর্ট বেঞ্চ বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) এ আদেশ দেন। আগামী ১৪ জুলাই কমিশনকে এই আদেশ বাস্তবায়নের ব্যাপারে অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
আইনজীবী মীর এ কে এম নুরুন্নবীর করা রিটের প্রাথমিক শুনানিতে এ আদেশ দেওয়া হয়। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি জানান, আগামী ১৪ জুলাই রিটটি আদেশের জন্য তালিকায় থাকবে। ওইদিন মামলার তদন্তের বিষয়ে অগ্রগতি আদালতকে জানাতে হবে।
এদিকে, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির। মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী ওই নারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই নারী প্রায় ১৫ দিন আগে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন।
গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে পরিবারের সদস্যরা বাড়ির পাশের পূজায় অংশ নিতে যান। ওই সময় ওই নারী বাড়িতে একা ছিলেন। আনুমানিক ১০টার দিকে ফজর আলী (৩৮) নামের এক ব্যক্তি তার বাবার বাড়ি গিয়ে ঘরের দরজা খুলতে বলেন। এ সময় তিনি দরজা খুলতে অস্বীকৃতি জানান। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করেন।
এ বিষয়ে ওই নারীর এক প্রতিবেশি বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে ওই বাড়িতে অনেক শব্দ হচ্ছিল। আমি ভয়ে দৌড়ে গিয়ে লোকজন ডেকে নিয়ে আসি। লোকজন গিয়ে দেখেন দরজা ভাঙা। পরে আমরা ওই নারীকে উদ্ধার করি। এ সময় কিছু লোক তাকে মারধর ও ভিডিও করেন।
তিনি বলেন, ‘পরে তারা বুঝতে পারেন ওই নারীর ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। তখন লোকজন ফজর আলীকে মারধর করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়।’
তবে গতকাল ভোরে তাকে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় একটি ভিডিও গত শনিবার রাতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর এ নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। পরে ওই নারীকে নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন, সুমন, রমজান আলী, আরিফ ও অনিক। তাদের সবার বাড়ি মুরাদনগর উপজেলায় বলে জানা গেছে।