ডার্ক মোড
Wednesday, 08 January 2025
ePaper   
Logo
আজমিরীগঞ্জে ড্রাগ লাইসেন্স, কেমিস্ট ও ফার্মাসিস্ট ছাড়াই চলছে ঔষধ বাণিজ্য

আজমিরীগঞ্জে ড্রাগ লাইসেন্স, কেমিস্ট ও ফার্মাসিস্ট ছাড়াই চলছে ঔষধ বাণিজ্য

আজমিরগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় ড্রাগ লাইসেন্স, কেমিস্ট ও ফার্মাসিস্ট ছাড়াই চলছে রমরমা ওষুধ বাণিজ্য। সরকারি রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই এন্টিবায়েটিক, ঘুমের ঔষুধসহ সব ধরনের ওষুধ বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। প্রশাসনের কোন রকম নজরদারি না থাকায় আইনের তোয়াক্কা না করে আজমিরীগঞ্জের অলিগলিতে গড়ে উঠেছে ওষুধের দোকান। অনেক ফার্মেসিতে কেমিস্ট বা ফার্মাসিস্ট না থাকলেও সবধরনের রোগের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া অবাধে বিক্রি হচ্ছে যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট ও মহিলাদের গর্ভপাতের ওষুধ। এতে করে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে এ উপজেলাবাসী। এভাবে ব্যবসা পরিচালনার জন্য ওষুধ প্রশাসনের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন স্হানীয় সচেতন মহল।

প্রতিষ্ঠিত ও সম্মানজনক ব্যবসার মধ্যে ফার্মেসি ব্যবসা অন্যতম। এই ব্যবসা করার জন্য বাধ্যতামূলক হচ্ছে, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে ড্রাগ লাইসেন্স নেয়া এবং প্রত্যেক ফার্মেসিতে একজন সনদপ্রাপ্ত ফার্মাসিস্ট থাকা। অথচ আজমিরীগঞ্জ উপজেলা সদরসহ ৫টি ইউনিয়নে রয়েছে ২শতাধিক ওষুধের দোকান। এর মধ্যে অধিকাংশ ফার্মেসিতে নেই ড্রাগ লাইসেন্স কিংবা সনদপ্রাপ্ত ফার্মাসিস্ট। এদের অনেকের বিরুদ্ধে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই রোগীদের অ্যান্টিবায়োটিকসহ বিভিন্ন রোগের স্পর্শকাতর ওষুধ বিক্রিরও অভিযোগ আছে।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ওষুধ তিনিই বিক্রি করতে পারবেন যার ফার্মাসিস্ট ট্রেনিং আছে এবং যিনি ড্রাগ লাইসেন্স পেয়েছেন। ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়া ঔষধের ব্যবসা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং আইনগতভাবে দন্ডনিয় অপরাধ।

দৈনিক আমার হবিগঞ্জের নিজস্ব জরীপে দেখা যায়, অ্যালোপ্যাথিক ঔষধের ফার্মেসি প্রায় ১২০টিসহ, হোমিওপ্যাথিক ও ইউনানি মিলে আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ১৮০ টি ঔষধের ফার্মেসি রয়েছে। তন্মধ্যে ২৫থেকে ৩০টি ফার্মেসির ড্রাগ লাইসেন্স থাকলেও বেশিরভাগই মেয়াদউর্ত্তীন্ন এবং নবায়নের জন্য আবেদন করা হয়েছে।আজমিরীগঞ্জ উপজেলার মোট ফার্মেসির ৭৫ শতাংশের কোন ধরনের ড্রাগ লাইসেন্স,কেমিস্ট ও ফার্মাসিস্ট ছাড়াই কেনা-বেচা করছে বিভিন্ন ঔষধ।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন ফার্মেসি ঘুরে দেখা যায়, আজমিরীগঞ্জ পৌরসভা সদরস্থ ও উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে গড়ে উঠেছে এসব অবৈধ ফার্মেসি ব্যবসা। চিকিৎসকের ছাড়পত্র ছাড়াই ক্রেতাদের এন্টিবাইটিকসহ যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট অবাধে বিক্রি করা হচ্ছে। একই চিত্র উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন বাজারে, গ্রামে গড়ে ওঠা ফার্মেসিগুলোতেও।খোদ উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্স আজমিরীগঞ্জ সদরের সামনে গড়ে উঠা ৫-৭ টি ফার্মেসির ড্রাগ লাইসেন্স,কেমিস্ট ও ফার্মাসিস্ট নেই বলে তথ্য পাওয়া গেছে।অপ্রাপ্ত বয়স্ক,অনভিজ্ঞ ছেলেদের দ্বারা প্রতিটি ফার্মেসি পরিচালনা করা হচ্ছে মর্মে একাধীক অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নামপ্রকাশ না করার শর্তে এক ফার্মেসির মালিক বলেন, ‘ড্রাগ লাইসেন্স পাওয়াটা অনেক কঠিন ব্যাপার, তাই লাইসেন্সের জন্য আবেদন করিনি। শুনেছি, আবেদন করলে নানা অজুহাতে অফিসের লোকজন টাকা-পয়সা চায়। এছাড়া লাইসেন্স ছাড়াইতো ওষুধ বিক্রয় করছি, কোন সমস্যা তো হচ্ছে না। ওষুধ প্রশাসনের লোকজন এলে কিছু দিলে চলে যাবে, এসব এখন সিস্টেমে চলে, বোঝেন না"।

ড্রাগ লাইসেন্স,কেমিস্ট ও ফার্মাসিস্ট ছাড়াও চলমান ফার্মেসির ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে কিনা জানতে ঔষধ তত্ত্বাবধায়ক সিলেট বিভাগীয় কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, হবিগঞ্জে আমাদের কোন দপ্তর নেই,লোকবল সংকট রয়েছে তাই নিয়মিত অভিযান হয় না,তবে অতি শীঘ্রই আজমিরীগঞ্জে অবৈধ ফার্মেসিগুলিতে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃমোঃ ইকবাল হোসেন বলেন,ড্রাগ লাইসেন্স,ফার্মাসিস্ট থাকা একটি ফার্মেসি ব্যবসার প্রধান উপকরন।এগুলি না থাকা আইনত অপরাধ,আপনারা ঔষধ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন,অবৈধ ফার্মেসি ব্যবসা বন্ধে আমি তাদেরকে আমার যথাসাধ্য সহযোগীতা করবও।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন