সরকারের মূল অর্থনৈতিক সংস্কারের অংশ হতে প্রস্তুত বিশ্বব্যাংক
নিজস্ব প্রতিবেদক
বিশ্বব্যাংক অন্তর্বর্তী সরকারের মূল অর্থনৈতিক সংস্কারের অংশ হতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইসার।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকার তেজগাঁও কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এ মন্তব্য করেন। বৈঠকে চলতি অর্থবছরের জন্য বিশ্ব ব্যাংকের প্রায় ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করা হয়।
অর্থনীতির সমস্যা কাটিয়ে ওঠা, দুর্নীতি দূর করা এবং বিচার ব্যবস্থার মতো ক্ষেত্রগুলোতে মৌলিক সংস্কার পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রয়াসে ব্যাপকভাবে সহায়তার জন্য প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানের প্রতিক্রিয়ায় বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাইসার বলেন, ‘আমাদের ওপর আস্থা রাখুন। আমরা সাহায্য করতে প্রস্তুত।’
রাইসার বলেন, বিশ্বব্যাংক সরকারের সংস্কার এজেন্ডা দেখে উচ্ছ্বসিত। এখন বাংলাদেশ সফর করা মূল্যবান। অনেক প্রত্যাশা রয়েছে।’
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক ব্যাংকিং, কর, শুল্ক, ভ্যাট, ডিজিটাইজেশন, দুর্নীতি বিরোধী পদক্ষেপে সংস্কার প্রয়াসে সহায়তা করতে প্রস্তুত।
রাইসার আরও বলেন, ‘বিদ্যমান ও নতুন বিনিয়োগের মাধ্যমে, আমরা অর্থনৈতিক সুশাসনের উন্নতি এবং প্রতি বছর চাকরির বাজারে প্রবেশকারী ২ মিলিয়ন বাংলেদেশি যুবকের জন্য আরও অধিক ও আরও ভালো কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে মনোযোগ দিচ্ছি।’
রাইসার জুলাই ও আগস্টে প্রাণহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন।
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ব্যাংকের সহায়তাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দুর্নীতি থেকে মুক্তি পেতে এবং একটি নতুন যাত্রার সূচনা করতে জনগণের কাছ থেকে ব্যাপক ম্যান্ডেট পেয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এটি সংস্কারের মৌসুম। আমরা এখনই শুরু করতে চাই।’ জুলাই-আগস্টে ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থান বিদ্যমান ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কারের জন্য মাঠ প্রস্তুত করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পেছনে ফিরে যেতে চাই না। এ আন্দোলন অতীতকে পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছে। এখন এটি একটি পরিচ্ছন্ন স্লট।’
ড. ইউনূস তার সরকার এখন পর্যন্ত যেসব সংস্কার উদ্যোগ নিয়েছে তার রূপরেখা তুলে ধরে বলেন, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পদক্ষেপগুলোর মধ্যে দুর্নীতি, শ্রম সংস্কার এবং যুব সমাজের উন্নয়নে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকার শ্রম সংস্কারে আইএলও কনভেনশন বাস্তবায়ন করবে, যা বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াবে এবং স্থানীয় উৎপাদনকারীদের আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে স্থান পেতে সহায়তা করবে। আমরা এ কাজটি সম্পন্ন করতে চাই। বৈশ্বিক খাতে তৈরি পোশাক ছাড়া অন্যান্য খাতেও বাংলাদেশের ভূমিকা রাখা উচিত।
সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার পদক্ষেপের প্রশংসা করে রাইসার বলেন, বাংলাদেশে বার্ষিক এফডিআই দেশের জিডিপির প্রায় অর্ধেক এবং এই অঞ্চলে এটি সর্বনিম্ন।
রাইসার বলেন, বিশ্বব্যাংক রোহিঙ্গা মানবিক সংকট এবং কক্সবাজারের স্বাগতিক জনগোষ্ঠীর জন্য ৭০ কোটি ডলার অনুমোদন করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বেড়ে ওঠা লাখ লাখ তরুণ-তরুণীর জন্য তিনি সহায়তা লাভের বিষয়ে আগ্রহী। ‘আমাদের এই বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে।’
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, সিনিয়র সচিব ও এসডিজি বিষয়ক প্রধান লামিয়া মোরশেদ, বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী প্রমুখ।
Comment / Reply From
You May Also Like
Latest News
Vote / Poll
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলা বন্ধ করতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্যোগ যথেষ্ট বলে মনে করেন কি?