
কুয়াকাটা উপকূল এখন মাদকের সেভ জোন, ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে গড ফাদাররা
গোফরান পলাশ, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা উপকূল এখন মাদকের সেভ জোন হিসেবে বিবেচ্য মাদকের গড ফাদারদের কাছে। গত ১০-১৫ বছর ধরে সমুদ্র পথে নিয়মিত আসছে মাদক। যা স্থানীয় মাদক সেবী ও পর্যটকদের কাছে বিক্রীর পর ফের নৌ ও সড়ক পথে পাচার হয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। চোলাই মদ, গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবা'র সহজলভ্যতার পর কুয়াকাটা উপকূলে এবার সন্ধান মিলছে ভয়ঙ্কর মাদক ক্রিষ্টাল মেথ'র। আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সোর্স পরিচয়ে মাদক সিন্ডিকেটের কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারা তোলারও অভিযোগ রয়েছে। এতে অভিযানের আগেই তথ্য চলে যাচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে। এাছাড়া মাদক বিরোধী অভিযানে খুচরা বিক্রেতা কিংবা বহনকারীরা গ্রেফতার হলেও স্বাক্ষ্য দুর্বলতায় আইনের ফাঁক দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে তারা। আর গড ফাদাররা বরাবরই থেকে যাচ্ছে অন্ধকারে। এতে মাদকের ভয়াল আগ্রাসন রোধ করা যাচ্ছে না বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
আইন শৃংখলা বাহিনীর তথ্য সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৬ অক্টোবর প্রতু্্যষে ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৫৬ পিস ইয়াবা সহ গ্রেফতার করা হয় টেকনাফের ইব্রাহীম ও উখিয়ার রোহিঙ্গা আলমকে। এসময় তাদের দখল থেকে জব্দ করা হয় একটি প্রাইভেট কার, বিদেশী পিস্তল, গুলি, একাধিক স্মার্ট ফোন সহ সিম। এনিয়ে মামলার পর আসামীদের রিমান্ডে নিয়ে দফায় দফায় নিবিড় জিজ্ঞাসা করা হলেও রহস্যজনক কারনে গড ফাদারদের নাম থেকে গেছে অন্ধকারে। এরপর আদালতের নির্দেশে সঠিক তথ্য উপাত্ত বের করতে একাধিক বার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বদল করা হলেও জানা যায়নি কিছুই। সব দায় বহনকারীদের উপর চাপিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তারা তাদের আখের গুছিয়েছেন। ২০১৭ সালের ১ জুন পুলিশের অভিযানে ফাতেমা আক্তার সানজিদা নামের এক নারীকে আলীপুর মৎস্য বন্দর থেকে ৩৯৫০ পিস ইয়াবা সহ গ্রেফতারের পর এক মাছ ধরা ট্রলার মাঝি ও এক প্রভাবশালী মৎস্য আড়ৎদারের নাম বেরিয়ে এলেও আদালতে জমা দেয়া পুলিশের তদন্ত রিপোর্টে গতানুগতিক তথ্য এসেছে। ট্রলার মাঝি ও মৎস্য আড়ৎদারের সংশ্লিষ্টতা তদন্ত কর্মকর্তা রহস্য জনক ভাবে এড়িয়ে গেছেন। ২০১৫ সালের ২ জুলাই রাতে একই মৎস্য বন্দরের খাপড়াভাঙ্গা নদী থেকে পুলিশ বিপুল পরিমান ভারতীয় শাড়ী ও মাদকের একটি চালান জব্দ করার পর রাতারাতি মাদক উধাও হয়ে জব্দ তালিকায় ১৮শ' পিচ ভারতীয় শাড়ী জব্দ দেখায় পুলিশ। এসময় নোয়াখালী, হাতিয়া, বরগুনার অধিবাসী ৫জনকে আটক করলেও কৌশলে ট্রলার মাঝি ও মালিককে সেভ করে আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করে পুলিশ। ২০২০ সালের ৫ ডিসেম্বর কুয়াকাটার একটি আবাসিক হোটেল থেকে ১২শ' বোতল বিদেশী মদ সহ দুই হোটেল কর্মচারীকে আটক করা হয়। এখানেও হোটেল মালিককে রাখা হয় অন্ধকারে। একই বছরের ২ মে উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের নিশানবাড়িয়া খাল থেকে একটি ট্রলার, ৬৫ হাজার পিস ইয়াবা, একটি মোটর সাইকেল, নগদ ২ লাখ টাকা জব্দ করা হয় এক অভিযানে। এসময় নারী সহ চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর রাতে পুলিশের অভিযানে উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের নেওয়াপাড়া গ্রামের জনৈক বনি আমিনের ঘরের চৌকির নীচে মাটি খুঁড়ে ৪০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হলেও পালিয়ে যায় বনি আমিন। কিন্তু ২০২০ সালের ১৩ এপ্রিল মহিপুর ইউনিয়নের কমরপুর গ্রাম থেকে ৬৫ হাজার পিস ইয়াবা সহ আটক করা হয় বনি আমিনকে।
এদিকে চলতি বছরের ৩ জুলাই জেলার কলাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৪ মাদক ব্যবসায়ীকে ভয়ংকর মাদক ৮ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ ও ইয়াবাসহ আটক করা হয়। অভিযানের পর কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে ৪ জুলাই রাতে পটুয়াখালী মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হামিমুর রশিদ সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় তিনি ক্রিস্টাল মেথ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
সূত্রটি আরও জানায়, আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে উপজেলার ২ টি থানার অধীনস্থ ২টি পৌরসভা ও ১২ টি ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন স্থান থেকে স্বল্প পরিমান চোলাই মদ , ইয়াবা ও গাঁজা সহ শত শত বিক্রেতা ও সেবনকারীকে আটকের পর মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হলেও ২-৪ মাস হাজত বাসের পর কারাগার থেকে বেরিয়ে ফের মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছেন তারা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিষিদ্ধ মাদকের ভয়াল আগ্রাসন রোধে জড়িতদের নিয়ে নিয়মিত কা্উন্সেলিংয়ের পাশাপাশি সংশোধনাগারে রেখে মনো চিকিৎসা প্রয়োজন। এছাড়া যুবসমাজকে রক্ষায় নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনাসহ মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তথ্য জেনে সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত পূর্বক তাদেরকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসা জরুরী।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, কলাপাড়া উপজেলায় এক পোটলা ( ছোট কাগজের প্যাকেট) গাঁজা আনুমানিক ১০০/২০০ টাকা। প্রকারভেদে প্রতিপিস ইয়াবা ২০০-৩০০ টাকা খুচরা মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। ইয়াবা বহনের কাজে কোমলমতি শিশু ও নারীদের ব্যবহার করা হচ্ছে।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাহমুদ হাসান বলেন , 'মাদকের বিস্তার আমি থানার সকল অফিসারদের সঙ্গে মিটিং করেছি। আর সোর্সদের ব্যাপারেও নতুন কৌশল অবলম্বন করবো। যেখানেই মাদকের সন্ধান পাওয়া যাবে আমাদের পুলিশ সেখানেই হাজির হবে।'
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জুয়েল ইসলাম বলেন, 'আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই আমরা মাদক ব্যবসায়ী ও ছিচকে চোরদের গ্রেফতার করছি। আর সোর্সদের বিষয়ে আমরা আরও সতর্কাবস্থা অবলম্বন করছি।’
আইন শৃংখলা বাহিনীর তথ্য সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৬ অক্টোবর প্রতু্্যষে ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৫৬ পিস ইয়াবা সহ গ্রেফতার করা হয় টেকনাফের ইব্রাহীম ও উখিয়ার রোহিঙ্গা আলমকে। এসময় তাদের দখল থেকে জব্দ করা হয় একটি প্রাইভেট কার, বিদেশী পিস্তল, গুলি, একাধিক স্মার্ট ফোন সহ সিম। এনিয়ে মামলার পর আসামীদের রিমান্ডে নিয়ে দফায় দফায় নিবিড় জিজ্ঞাসা করা হলেও রহস্যজনক কারনে গড ফাদারদের নাম থেকে গেছে অন্ধকারে। এরপর আদালতের নির্দেশে সঠিক তথ্য উপাত্ত বের করতে একাধিক বার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বদল করা হলেও জানা যায়নি কিছুই। সব দায় বহনকারীদের উপর চাপিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তারা তাদের আখের গুছিয়েছেন। ২০১৭ সালের ১ জুন পুলিশের অভিযানে ফাতেমা আক্তার সানজিদা নামের এক নারীকে আলীপুর মৎস্য বন্দর থেকে ৩৯৫০ পিস ইয়াবা সহ গ্রেফতারের পর এক মাছ ধরা ট্রলার মাঝি ও এক প্রভাবশালী মৎস্য আড়ৎদারের নাম বেরিয়ে এলেও আদালতে জমা দেয়া পুলিশের তদন্ত রিপোর্টে গতানুগতিক তথ্য এসেছে। ট্রলার মাঝি ও মৎস্য আড়ৎদারের সংশ্লিষ্টতা তদন্ত কর্মকর্তা রহস্য জনক ভাবে এড়িয়ে গেছেন। ২০১৫ সালের ২ জুলাই রাতে একই মৎস্য বন্দরের খাপড়াভাঙ্গা নদী থেকে পুলিশ বিপুল পরিমান ভারতীয় শাড়ী ও মাদকের একটি চালান জব্দ করার পর রাতারাতি মাদক উধাও হয়ে জব্দ তালিকায় ১৮শ' পিচ ভারতীয় শাড়ী জব্দ দেখায় পুলিশ। এসময় নোয়াখালী, হাতিয়া, বরগুনার অধিবাসী ৫জনকে আটক করলেও কৌশলে ট্রলার মাঝি ও মালিককে সেভ করে আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করে পুলিশ। ২০২০ সালের ৫ ডিসেম্বর কুয়াকাটার একটি আবাসিক হোটেল থেকে ১২শ' বোতল বিদেশী মদ সহ দুই হোটেল কর্মচারীকে আটক করা হয়। এখানেও হোটেল মালিককে রাখা হয় অন্ধকারে। একই বছরের ২ মে উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের নিশানবাড়িয়া খাল থেকে একটি ট্রলার, ৬৫ হাজার পিস ইয়াবা, একটি মোটর সাইকেল, নগদ ২ লাখ টাকা জব্দ করা হয় এক অভিযানে। এসময় নারী সহ চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর রাতে পুলিশের অভিযানে উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের নেওয়াপাড়া গ্রামের জনৈক বনি আমিনের ঘরের চৌকির নীচে মাটি খুঁড়ে ৪০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হলেও পালিয়ে যায় বনি আমিন। কিন্তু ২০২০ সালের ১৩ এপ্রিল মহিপুর ইউনিয়নের কমরপুর গ্রাম থেকে ৬৫ হাজার পিস ইয়াবা সহ আটক করা হয় বনি আমিনকে।
এদিকে চলতি বছরের ৩ জুলাই জেলার কলাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৪ মাদক ব্যবসায়ীকে ভয়ংকর মাদক ৮ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ ও ইয়াবাসহ আটক করা হয়। অভিযানের পর কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে ৪ জুলাই রাতে পটুয়াখালী মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হামিমুর রশিদ সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় তিনি ক্রিস্টাল মেথ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
সূত্রটি আরও জানায়, আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে উপজেলার ২ টি থানার অধীনস্থ ২টি পৌরসভা ও ১২ টি ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন স্থান থেকে স্বল্প পরিমান চোলাই মদ , ইয়াবা ও গাঁজা সহ শত শত বিক্রেতা ও সেবনকারীকে আটকের পর মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হলেও ২-৪ মাস হাজত বাসের পর কারাগার থেকে বেরিয়ে ফের মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছেন তারা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিষিদ্ধ মাদকের ভয়াল আগ্রাসন রোধে জড়িতদের নিয়ে নিয়মিত কা্উন্সেলিংয়ের পাশাপাশি সংশোধনাগারে রেখে মনো চিকিৎসা প্রয়োজন। এছাড়া যুবসমাজকে রক্ষায় নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনাসহ মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তথ্য জেনে সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত পূর্বক তাদেরকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসা জরুরী।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, কলাপাড়া উপজেলায় এক পোটলা ( ছোট কাগজের প্যাকেট) গাঁজা আনুমানিক ১০০/২০০ টাকা। প্রকারভেদে প্রতিপিস ইয়াবা ২০০-৩০০ টাকা খুচরা মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। ইয়াবা বহনের কাজে কোমলমতি শিশু ও নারীদের ব্যবহার করা হচ্ছে।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাহমুদ হাসান বলেন , 'মাদকের বিস্তার আমি থানার সকল অফিসারদের সঙ্গে মিটিং করেছি। আর সোর্সদের ব্যাপারেও নতুন কৌশল অবলম্বন করবো। যেখানেই মাদকের সন্ধান পাওয়া যাবে আমাদের পুলিশ সেখানেই হাজির হবে।'
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জুয়েল ইসলাম বলেন, 'আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই আমরা মাদক ব্যবসায়ী ও ছিচকে চোরদের গ্রেফতার করছি। আর সোর্সদের বিষয়ে আমরা আরও সতর্কাবস্থা অবলম্বন করছি।’
মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন
আপনি ও পছন্দ করতে পারেন
সর্বশেষ
জনপ্রিয়
আর্কাইভ!
অনুগ্রহ করে একটি তারিখ নির্বাচন করুন!
দাখিল করুন