ডার্ক মোড
Monday, 17 March 2025
ePaper   
Logo
৯০ দিন ধ‌রে বন্ধ চিলমারী-‌রৌমারী নৌ রু‌টের ফে‌রি

৯০ দিন ধ‌রে বন্ধ চিলমারী-‌রৌমারী নৌ রু‌টের ফে‌রি

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

নব্যতা সংক‌ট দে‌খি‌য়ে প্রায় তিন মাস ধ‌রে চিলমারী-‌রৌমারী নৌরু‌টে ফে‌রি চলচাল বন্ধ র‌য়ে‌ছে।

অ‌ভি‌যোগ র‌য়ে‌ছে, নাব‌্যতা সংক‌টে নদী খন‌নের নামে বিআইড‌ব্লিউটিএ'র দা‌য়িত্বশীল এক‌টি চক্র ব্রহ্মপুত্র ন‌দের বালু বি‌ক্রির স‌ঙ্গে জ‌ড়ি‌য়ে প‌ড়ে‌ছে। অপর‌দি‌কে নাব‌্যতার সংকট দে‌খি‌য়ে ফে‌রি চলাচল বন্ধ থাকায় চক্রটি নৌকা মা‌লিক‌দের স‌ঙ্গে যোগসাজশ ক‌রে ক‌মিশন বা‌ণিজ‌্য কর‌ছে ব‌লে একা‌ধিক সূত্র জা‌নি‌য়েছে।

মা‌সের পর মাস ফেরি বন্ধ থাকায় কো‌নো ভ্রু‌ক্ষেপ নেই কর্তৃপ‌ক্ষের। ফ‌লে সরকা‌রের লোকসা‌নের পাশাপা‌শি জনগ‌নের ‌প‌কেট কাট‌া যা‌চ্ছে।

এদি‌কে ফেরি চলাচল না হওয়ায় প্রায় প্রতি মাসে সা‌ড়ে ১২ লাখ টাকা গচ্ছা দিচ্ছে বিআইডব্লিউটিসি বলে জানা গেছে। পাশাপাশি ফেরি বন্ধ থাকায় ফেরির ইঞ্চিন ক্ষতির মুখে পড়ছে।

জানা গেছে, চিলমারীর রমনা ঘাট থেকে রৌমারীর ফলুয়ার চর ঘাটের দূরত্ব প্রায় ২২ কিলোমিটার। এই ২২ কিলোমিটার নদী পথ পাড়ি দিতে নানা সংগ্রাম করতে হয় এ অঞ্চলের মানুষদের। দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান ঘটিয়ে ২০২৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর চিলমারী-রৌমারী নৌ রুটে ফেরি চলাচল শুরু হয়। ফেরি চলাচল বন্ধ রাখায় ভোগা‌ন্তি‌তে প‌ড়ে‌ছেন মানুষজন।

দীর্ঘদিন ধরে ফেরি বন্ধ থাকায় রৌমারী ফেরিঘাট দিয়ে ব্রহ্মপু‌ত্র ন‌দের বালু ভর্তি ট্রাক্টর, ডাম্পার যাতায়াত করায় ঘাটটি নষ্ট হয়ে গেছে। ফেরি বন্ধ থাকায় আসন্ন ঈদুল ফিতরে ঘর ফেরা মানুষদের ভোগান্তি এবং বাড়তি অর্থ নষ্ট হবে বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উত্তরাঞ্চলের যানবাহনগুলো ১৫০ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ পাড়ি দিয়ে যমুনা সেতু হয়ে ঢাকায় যাতায়াত করে। ফে‌রি‌টি রমনা ঘাট হতে ফকিরেরহাট ঘাটে স্থানান্তর করা হলে অনেক কম সময়ে এ অঞ্চলের বাস, ট্রাক, ছোট গাড়িগুলো ফেরী পারাপার করে অল্প সম‌য়ে ঢাকা যাতায়াত করতে পারবে। এতে যানবাহনগুলোর সময় এবং জ্বালানি খরচ অনেকাংশে কমে যাবে। এ ছাড়া নাইট নেভিগেশন (বাতি) ব্যবস্থা চালু থাকলে রাতের বেলা ফেরি চলা করা সম্ভব হ‌বে ব‌লে জানায় সূত্রটি।

দিনাজপুর থে‌কে চিলমারীর ফ‌কি‌রেরহা‌টের ঘা‌টে চাল নি‌য়ে আসা ট্রাকচালক লোকমান হো‌সেন জানান, এই ঘাট (ফ‌কি‌রেরহাট ঘাট) দি‌য়ে ফেরি চলাচল কর‌লে রুটটি অ‌নেক ছোট হতো ও দিবারাত্রী চলাচল কর‌তে পার‌লে উত্তর অঞ্চলের যাত্রীবাহী বাস, মালবাহী ট্রাক, ছোটগাড়ীগুলো এই রুট ব্যবহার করে ঢাকা চলাচল করতো। এই রু‌টের সমস্যাগু‌লো সমাধান করলে এ ফে‌রি উত্তর অঞ্চলের প্রধান প্রবেশদ্বার হিসাবে কাজ করবে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন ক‌র্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) চিলমারীর ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) প্রফুল্ল চৌহান বলেন, গত ২৩ ডি‌সেম্বর নাব্যতা সংকটে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কদম এবং কুঞ্জলতা নামে দুটি ফেরি চলাচলের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত রাখা আছে। বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক নৌরুটের প্রয়োজনীয় সমস্যা সমাধান করে ফেরি চলাচলের নির্দেশনা আসলে সঙ্গে সঙ্গেই সার্ভিস চালু করা হবে।

বিআইডব্লিউটিএ'র উপ-পরিচালক শেখ রবিউল ইসলাম এসব অ‌ভি‌যোগ অস্বীকার বলেন, ওয়াটার লেভেল না বাড়া পর্যন্ত ফেরি চলাচল করা সম্ভব নয়। কেননা প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে ফেরি চলাচল সম্ভব হচ্ছে না। ত‌বে ‌রৌমারীর ঘাট দি‌য়ে বালু যাওয়ার কারণে ঘাট নষ্ট হওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন