ডার্ক মোড
Friday, 19 April 2024
ePaper   
Logo
সন্দ্বীপে ধারাবাহিক চুরির ঘটনা কি আসলেই চুরি নাকি চক্রান্ত

সন্দ্বীপে ধারাবাহিক চুরির ঘটনা কি আসলেই চুরি নাকি চক্রান্ত

সন্দ্বীপ (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে ধারাবাহিক চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের প্রশ্ন উঠেছে জনমনে।পুরো সন্দ্বীপ জুড়ে চলছে এইসব চুরির ঘটনা।এই চোর চক্রের সদস্যরা টার্গেট করে একেক দিন একেক এলাকা।আজ মগধরা তো কাল মাইটভাঙ্গা,আরেকদিন কালাপানিয়া।তাই বুঝা যাচ্ছে সংঘবদ্ধ চুরি এটা। সবচেয়ে দেখার বিষয় হচ্ছে, একসাথে ৮-১০টি দোকানে চুরি হলেও শুধু ক্যাশবাক্স থেকে সামান্য কিছু টাকা নিয়ে যাচ্ছে।

এই নিয়ে সচেতন জনগণের মনে প্রশ্ন উঠেছে এগুলো কি চোরে চুরি করছে নাকি সংঘবদ্ধ একটা চক্র এমন কর্মকাণ্ড করে অন্য কাউকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চক্রান্ত।চোর চুরি করলে তো এমন হওয়ার কথা না।একসাথে ১০/১৫ টা দোকান একসাথে,শুধুমাত্র অল্প টাকা নিয়ে যাওয়া অথবা আজ এই এলাকা কাল ওই এলাকা।

অভিযোগ উঠেছে,ব্যক্তিগত আক্রোশে চুরির অভিযোগ তুলা হচ্ছে,এমনকি কয়েকজন সংবাদকর্মীর বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছে এইসব চুরিকে ঘিরে।বাজারের পুরাতন কমিটি ভেঙে নিজস্ব লোক দিয়ে নতুন কমিটি গঠনের জন্যে ও বাজারে চুরির অভিযোগ আনা হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্র জানা যায়,গত ২৮শে ডিসেম্বর রাতে দক্ষিণ সন্দ্বীপের জনতা মার্কেট ৫টি,মগধরা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সরকারি পুকুর পাড় ও আদর্শ মার্কেট একসঙ্গে ১০টি দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে।সবমিলিয়ে ক্যাশবাক্স ভেঙে ১৩০০টাকা নিয়ে যায়।

পরদিন বুধবার দিবাগত রাতে সারিকাইত ইউনিয়নের শিবের হাটের দক্ষিণ মাথা থেকে বলির পোল পর্যন্ত ৮টি দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে।তাও সামান্য টাকা নিয়ে যায়।এরপর(৩ জানুয়ারী)রাতে এনাম নাহার মোড়ে একটি দোকান,আবুল কাশেম মহিলা কলেজে চুরির চেষ্টা।এর কয়েকদিন পর রহমতপুর এলাকায় একাধিক দোকানে চুরি হয়।এর মধ্যে কয়েকটি অটোরিকশা,ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চুরি হয়।

জনতা মার্কেট ও শিবের হাটের দক্ষিণ মাথায় সব মিলিয়ে সাত থেকে আটটি দোকানে চুরির ঘটনা ঘটেছে।দোকানে ক্যাশ বাক্সে হয়তো ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা ছিল।ওই টাকাগুলোই নিয়ে গেছে চক্রটি। এছারা সম্প্রতি বানীরহাটে ১৪ টি দোকানে চুরি হয়। এই চুরিতেও ক্যাশবাক্স হতে মোট ১০/১৫ হাজার টাকা চোরেরা নিয়ে যায়। অথচ অন্য কোন মালামালে হাত দেয় নি। চুরির এই বিষয়গুলো রহস্যজনক।

এদিকে এতগুলো চুরির ঘটনার মধ্যে মাত্র চার টি ঘটনায় থানায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।নানা ঝামেলার কারণে ভুক্তিভোগীরা থানায় অভিযোগ করতে অনিহা দেখাচ্ছেন।তাছাড়া চুরির মামলায় আসামিকে জেলে পাঠানো হলেও কয়েকদিন পর জামিনে বের হয়ে বাদির উপর নানা ঝামেলার সৃষ্টি করে বলে জানা গেছে।

পুলিশের দাবি, চুরির ঘটনা ৬১ টা বলা হলেও ঘটনা এত বেশি না। অভিযোগ দেওয়া চারটি ঘটনায় সন্দ্বীপ পৌরসভার পৌরভবনের পেছনে শিবলু নামে এক চোরের বাড়ি থেকে মালামাল উদ্ধার করেছে। পাশাপাশি শিবলুর পুকুরে ডুবানো অবস্থায় চোরায় সিএনজি চালিত অটোরিকশা,ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ও ভ্যানগাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।অভিযানের টের পেয়ে শিবলু পালিয়ে গেছে।এছাড়া রহমতপুরের মসজিদের দানবাক্স ভেংগে টাকা চুরির ঘটনায় জড়িত তিনজনকে আটক ও চোরাই টাকা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া চোরাই গরু আসামীসহ উদ্ধার হয়। এছাড়া চুরির সাথে জড়িত এ পর্যন্ত মোট ০৮ জনকে আটক করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত আছে।

ওসি আরো বলেন,তাদের জনবল ও যানবাহন সংকট আছে। এরমধ্যে তাদের কাজ করতে হচ্ছে।তবুও তার নিরাপত্তা জোরদার করেছেন।সেনেরহাট,শিবেরহাট ও উপজেলা এলাকায় স্থায়ীভাবে পুলিশ রাখা হয়েছে।

৫০টির ও অধিক বাজার এবং বিচ্ছিন্ন ভাবে রাস্তার মোড়ে মোড়ে অনেক দোকান।পুলিশ দিয়ে সব নজরদারীর মধ্যে আনা সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি বলেন,বড় বড় বাজারগুলোর নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা উচিত।শিবেরহাট এলাকায় একটা মিনি শহর।সেখানে আরও নিরাপত্তা প্রহরী বাড়ানোর জন্য তিনি ইতোমধ্যে মাইটভাঙা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সহ অন্যন্য এলাকার জন্য সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের কাছে সহযোগীতা চেয়েছেন।

সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সম্রাট খীসা বলেন, গতকালের আইনশৃঙ্খলা সভায় প্রতিটি বাজার সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা ও নিরাপত্তাপ্রহরীদের আরও সক্রিয় করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।এছাড়া পুলিশের টহল আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।চোরদের ধরতে স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের সহযোগীতা চাওয়া হয়েছে।প্রতিটি বাজারে সিসি ক্যামেরা লাগানোর সিদ্ধান্তটি নোটিশ আকারে প্রতিটি বাজার কমিটির কাছে পাঠানো হবে জানান তিনি।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন