পত্নীতলায় ছাত্রলীগ নেতা কর্তৃক তরুণীকে নির্যাতন
পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি
নওগাঁর পত্নীতলায় নজিপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামিম রেজা কর্তৃক এক তরুণীকে বেধড়ক মারধর ও পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকিসহ সুযোগ পেলে ধর্ষণের হুমকি দিয়েছেন।
অসামাজিক কাজে বাধা ও প্রতিবাদ করায় ২২ বছর বয়সী ওই নির্যাতিতা তরুণীকে হেনস্তা করার অভিযোগ এনে ছাত্রলীগ নেতার নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী। অবশেষে থানা পুলিশ ভুক্তভোগীর মুখে ঘটনার বিবরণ জবানবন্দি গ্রহণ করে ও ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী, হাসপাতাল ও থানা সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) উপজেলা সদর নজিপুর পৌর এলাকার সরকারি কবরস্থান সংলগ্ন এলাকায় ওই ঘটনাটি ঘটেছে। পরে নির্যাতিত ওই তরুণী উপজেলা সদর সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। স্থানীয় ছাত্রলীগ ও রাজনৈতিক কর্মিরা বিষয়টি নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে।
১৫ ফেব্রুয়ারি অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা শামিমের মা পান্না বিবি নির্যাতিতা তরুণীকে দেখতে হাসপাতালে যান ও এসময় একমাত্র ছেলের ঘটনাটির ভুল স্বাীকার করে আপোস করার পরামর্শ দেন। ঘটনার পর হতেই স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতারা ঘটনাটি প্রকাশ না করাসহ আপোস করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘আমার মেয়ের ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও আইনগত ভাবে অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। যাতে অন্য কারো মেয়ে এমন ঘটনার শিকার না হন।
থানার লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নির্যাতনের শিকার ওই তরুণীর বাড়ির পাশে ১। বিবাদী শামিম রেজা (২৬), পিতা-মোস্তফা, ঠিকানা-নজিপুর নতুনহাট, উপজেলা-পতœীতলা, জেলা-নওগাঁসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫ জন একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন সময় অবৈধভাবে মেয়ে নিয়ে আসে ও গান-বাজনাসহ সমাজে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে বসবাস করে আসছেন। এমন অসামাজিক কাজের প্রতিবাদ করলে নানা রকম গালিগালাজ করে ও সুযোগ পাইলে ওই তরুণীকে ধর্ষণের হুমকি প্রদান করে।
এরই ধারাবাহিকতায় ১৪ ফেব্রুয়ারি বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিবাদীসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫ জন একটি মেয়েকে নিয়ে এসে ওই ভাড়া বাসায় অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয় ও হৈ-চৈ শুরু করলে নিষেধ করলে বিবাদীগণ ওই তরুণীকে কিল, ঘুষি, লাথিসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছিলাফুলা জখম করে। পরে ১ নম্বর বিবাদী তরুণীর মাথার চুল ধরিয়া মাটিতে ফেলিয়া বাঁশের লাঠি দিয়া এলোপাতাড়ী ভাবে হাত, পা, উরুসহ বিভিন্ন স্থানে মারাত্বক জখমসহ শরীরের কাপড় বিবস্ত্র ও শ্লীলতহানী করে।
এমনকি, ওই তরুণী ১ নং বিবাদীকে বাধা দিলে হাত পা দিয়ে গলায় চাপিয়া ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে।
এছাড়াও উল্লেখিত সময় নির্যাতনের শিকার ওই তরুণীর গলার আট আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন (যাহার আনুমানিক মূল্য ৪৫ হাজার টাকা) জোর পূর্বক অসৎ উদ্দেশ্যে ছিনিয়ে নেয় ও পরে তাঁর পরিবারের লোকজনকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে এলাকা ত্যাগ করে।
এ বিষয়ে পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পলাশ চন্দ্র দেব বলেন, ‘অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’