
নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনে হুমকির মুখে সেতু ও সংযোগ সড়ক
পঞ্চগড় (দেবীগঞ্জ) প্রতিনিধি
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই রাঙাপানি নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পড়েছে সেতু এবং সংযোগ সড়ক।
বৃহস্পতিবার ( ২০ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের খয়ের বাগান এলাকায় রাঙা পানি নদীর উপর নির্মিত সেতুর নিচে থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী যে কোন সেতুর উভয় দিকে এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলনের নিয়ম না থাকলেও সেতুর একদম নিচে থেকে শুরু করে দুই দিকে ১০০ মিটারের মধ্যে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রথমে উত্তোলন করা বালু খয়ের বাগানে স্তুপ করে রাখা হয়, পরে সুবিধাজনক সময় মাহেন্দ্র টলিতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অন্যত্র।
এদিকে, প্রতিনিয়ত রাঙাপানি নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর দুই তীরে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে খয়ের বাগানের কয়েক বিঘা জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিশেষ করে সেতুর নিচ থেকে বালু উত্তোলন করার ফলে সেতুর পূর্ব দিকের গাইড ওয়ালে ধ্বস শুরু হয়েছে। যেকোনো সময় সংযোগ সড়কেও ভাঙ্গনের সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত খোরশেদ আলম নামে এক জমির মালিক প্রতিবেদককে বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে হাতে গোনা তিন/চার জন লোক মাহেন্দ্র টলি দিয়ে নদী থেকে বালু তুলছেন। এর ফলে নদী ভাঙ্গনে আমাদের কয়েক বিঘা জমি নদীতে চলে গেছে। আমারা বেশ কয়েকবার তাদের বালু তুলতে নিষেধ করেছি কিন্তু তারা নিয়মিত বালু উত্তোলন করেই যাচ্ছে।
গোলাম মোর্শেদ নামে স্থানীয় এক যুবক বলেন, ২০২০ সালে অতিবৃষ্টিতে এই সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে গিয়েছিল। তখন তিন ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতের সমস্যা হয়েছিল। এদিকে গত দুই তিন বছর ধরে যেভাবে নিয়ম নিতির তোয়াক্কা না করে সেতুর নিচে থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে তাতে সামনের বর্ষায় সেতু এবং সংযোগ সড়ক ভেঙে যাওয়ার শংকা রয়েছে।
এদিকে কোন ধরনের ইজারা ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র প্রশাসনের নজর এড়িয়ে দিনে এবং রাতে নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে। তবে উপজেলা সদরের এত কাছে হওয়া সত্ত্বেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়নি কোন ধরনের ব্যবস্থা।
এবিষয়ে দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদুল হাসান বলেন, যদি পয়েন্ট হিসেবে ইজারা দেয়া না হয় তাহলে বালু উঠানো অবৈধ। এবিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা হবে যদি পয়েন্টের ইজারা না থাকে তাহলে তাদের নিষেধ করা হবে।