ডার্ক মোড
Thursday, 25 April 2024
ePaper   
Logo
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে এসে নির্বাচন করুন : কাদের

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে এসে নির্বাচন করুন : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে এসে নির্বাচনে আসতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূত মাথা থেকে নামান। সোজা কথা, সোজা পথে নির্বাচনে আসুন। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো বাংলাদেশেও নির্বাচন হবে।’

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার এক বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (বিএনপি) বিভাগীয় সমাবেশ করবে আবার ডিসেম্বরে অবরোধ। এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেছে, আগের অবরোধ তোলে নাই, এখন আবার অবরোধ! আমি বললাম আগের অবরোধ প্রত্যাহার না করে নতুন করে আবার অবরোধ কেন-এটা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে প্রশ্ন করেন। তিনি কেন এটা করবেন। কেন এটা করতে যাচ্ছেন?’

কাদের আরও বলেন, সরকার রুটিন দায়িত্ব পালন করবে। মূল দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন করবে। সরকারের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাও নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সরকার তখন শুধু পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক সরকারের মতো রুটিন সরকার থাকবে। সরকার না থাকলে কারা চালাবে দেশ? আপনাদের হাতে দেব?

বিএনপি আন্দোলনের হুঁশিয়ারিকে উড়িয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কত গণআন্দোলন করলেন, ঘন ঘন বললেন। এখন বলছেন গণআন্দোলন করবেন। ১৩ বছর চলে গেলো দেখতে দেখতে। ১৩ বছর চলে গেলো রোজার ঈদ, কোরবানির ঈদ, পরীক্ষার পর, বর্ষার পর...এই এতো বছরে কতবার যে আন্দোলনের ডাক। দেখতে দেখতে ১৩ বছর আন্দোলন হবে কোন বছর?

কর্মসূচিতে লাঠিতে করে জাতীয় পতাকা আনার সমালোচনা করে এ বিষয়ে বিএনপিকে সতর্ক করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির আন্দোলনের হাক-ডাকে আওয়ামী লীগ ভীত, সে রকম উদ্ভট চিন্তা কেউ করে না। আসেন মাঠে আসেন। লাঠি নিয়ে এলে খবর আছে। জাতীয় পতাকার সাথে লাঠি এটা আমরা মেনে নিতে পারব না। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা আমরা মেনে নেব না।

এ সময় তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সতর্ক অবস্থায় আছে, সক্রিয় আছে। সতর্ক অবস্থায় সংযমী হয়ে আমরা থাকব, রাজপথে ছিলাম, আছি। আন্দোলনের ভয় আওয়ামী লীগকে দেখাবেন না।

দলের জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক করলেন কাদের

দলের জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক করে দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, যারা যেখানে অপকর্ম করছেন সব তথ্য কিন্তু নেত্রীর কাছে আছে। সবার এসিআর আছে। সময় মতো টের পাবেন। কেউ কেউ টের পাচ্ছেন, বাকিরা সামনে পাবেন।

নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়ে জমিদারি করবেন শেখ হাসিনা সেটা কোনোদিনই ক্ষমা করবেন না। জনপ্রতিনিধি জমিদারি মানসিকতা নিয়ে শেখ হাসিনার দলে থাকতে পারবেন না, বঙ্গবন্ধুর দলে থাকতে পারবেন না।

সংগঠনের যারাই অপকর্ম করে সরকারকে বিব্রত করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়ে কাদের বলেন, ‘আপনাদের কাছে অনুরোধ রইলো, এতো অর্জন, উন্নয়ন শেখ হাসিনার; দুচারজনের অপকর্মের জন্য যেন ম্লান না হয়।’

পরিষ্কার বলে দিতে চাই, আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের পরিচয়ে যারাই অপকর্ম করবে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। কোনো অপরাধীকে আওয়ামী লীগ ছাড় দেবে না। অপকর্মকারীদের জন্য সাফল্য ম্লান হতে পারে না। দোষ করে গুটিকয়েক, দোষ হয় পুরো সরকারের, এটা আমরা হতে দেব না।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ক্রাইসিস ম্যানেজার’ আখ্যা দিয়ে দেশের অবকাঠামোসহ সার্বিক বিষয়ে অভূতপূর্ব উন্নয়নে তার দূরদর্শী পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের প্রশংসা করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, একজন শেখ হাসিনা আছেন বলেই দেশে আজ উন্নয়নের জোয়ার বইছে।

পরে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে শিশুদের নিয়ে কেক কাটেন ওবায়দুল কাদের। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে এদিন রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে জন্ম নেওয়া শিশুদের অভিভাবকদের হাতে শুভেচ্ছা স্মারক তুলে দেন ওবায়দুল কাদের।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মেজবাউল হোসেন সাচ্চুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব লাকী ইনাম, বিশিষ্ট শিশু চিকিৎসক অধ্যাপক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ডা. সাইফুদ্দিন আহমেদ।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু। এ সময় অন্যদের মধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন, সাধারণ সম্পাদক তারেক সাঈদ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন