
জাদুকাটা শ্রমিকের লাশ ধামাচাপার চেষ্টা : ম্যাজিস্ট্রেট বিহীন লাশ দাফনের অনুমতি দিয়ে বিতর্কিত এখন ওসি দেলোয়ার
এমদাদুর রহমান চৌধুরী জিয়া
মৃত্যুবরণকারীর লাশ দাফনের জন্য মৌখিকভাবে কিংবা লিখিতভাবে ওসি’র অনুমতি/সম্মতি প্রদানের কোন রকম এখতিয়ার না থাকলে ও লাশ দাফনের অনুমতি দিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের আত্মীয় পরিচয়ে দাপুটে সেই তাহিরপুর থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন।
তিনি ছিলেন সদ্য সুনামগঞ্জ থেকে প্রত্যাহার হওয়া সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেনের মাসোয়ারা বাণিজ্যের সেকেন্ড হ্যান্ড কমান্ড।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের সীমান্তনদী জাদুকাটায় পরিবেশধ্বংসী সেইভ মেশিনে বালি পাথর চুরির ঘটনা ধামাচাঁপা দিতে গিয়ে নদীতে ডুবে নিহত এক শ্রমিকের লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই গোপনে দাফন করা হয় থানার ওসি দেলোয়ারের অনুমতি নিয়ে।
নিহত শ্রমিক হাবিবুর রহমান বিশ্বম্ভরপুরের বসন্তপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে।
এ ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার দিবাগত রাতে নির্মাণষাধীন জাদুকাটা সেতুর দক্ষিণে অর্ধ শতাধিক পরিবেশধ্বংসী ইঞ্জিন চালিত (যান্ত্রিক) সেইভ মেশিনে খনিজ বালি পাথর চুরি করতে যায় কয়েক শতাধিক শ্রমিক।
বৃহস্পতিবার ভোর রাতে অন্য সবার সাথে থাকা সেইভ মেশিনে বালি পাথর উক্তোলনকারি শ্রমিক বিশ্বম্ভরপুরের বসন্তপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান জাদুকাটার পানিতে ডুবে নিখোঁজ হন। নিখোঁজের কয়েক ঘন্টা পর জাদুকাটায় ভেসে উঠে হাবিবুর রহমানের মরদেহ।
এদিকে পরিবেশ ধ্বংসী সেইভ মেশিনে জাদুকাটায় থাকা রাষ্ট্রীয় সম্পদ কয়েককোটি টাকার খনিজ বালি পাথর চুরির ঘটনা ধামাচাপা দিতে গিয়ে থানার ওসি ও বাদাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রর আইসি নিহত শ্রমিককে মনগড়াভাবে শ্বাসকষ্টের রোগী হিসাবে মৃত্যু হয়েছে বলে চালিয়ে দেয় লোক মুখে।
বৃহস্পতিবার সন্ধায় তাহিরপুর থানার বাদাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রর ইনচার্জ এসআই আবুল কালাম চৌধুরী বললেন, ওই শ্রমিক শ্বাসকষ্টের রোগী ছিল তাই ওসি স্যার লাশ বাড়ি নিয়ে গিয়ে দাফনের জন্য মৌখিকভাবে অনুমতি দিয়েছেন।
তাহিরপুর থানার ওসি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের বললেন,ওই শ্রমিক অসুস্থ্য ছিল তাই নিহত হবার পর কেউ অভিযোগ না করায় আমি মৌখিকভাবে লাশ দাফনের অনুমতি দিয়েছি।
নিহতের লাশ দাফন করতে হলে জেলা প্রশাসক (জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটে)’র বরাবর নিহতের পরিবারের উপযুক্ত উওরাধিকারী কারো প্রতি কোন রকম অভিযোগ নেই বলে লিখিত আবেদন করার বিধান রয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে সীমান্তনদী জাদুকাটার ওসি নিজ ক্ষমতাবলে নিহত শ্রমিকের লাশ দাফনে মৌখিকভাবে অনুমতি দেন।