
চাঁদপুরের গ্রামে তৈরী হয় জামদানি
চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুরের হাইমচরের দক্ষিণ আলগী দুর্গাপুর ইউনিয়নের পশ্চিম চর কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা রনি পাটোয়ারী। দিনভর একটি দোচালা টিনের ঘরে ক্ষুদ্র পরিসরে জামদানি শাড়ি তৈরিতে ব্যস্ত দেখা যায় তাকে।
নিজের্ বাড়িতে জামদানি শাড়ি বানিয়ে রনি পাটোয়ারী ইতিমধ্যে সাড়া ফেলেছেন এলাকায়। প্রতিনিয়ত নিজ এলাকা ছাড়িয়ে এই জামদানি শাড়ির চাহিদা দেশজুড়ে ছড়িয়ে দিতে মরিয়া এই উদ্যোক্তা।
প্রায় ২০ বছর আগে পারিবারিক অভাব কাটাতে রনি হাইমচর ছেড়ে পাড়ি জমান নারায়ণগঞ্জে। সেখানে নানা জায়গায় থেকে জামদানি কাপড় বোনার কাজ রপ্ত করে এলাকায় ফিরে আসেন। একাডেমিক পড়াশোনা না থাকলেও এখন এই শাড়ি বিক্রিতেই রনি সংসারের হাল ধরেছেন। বলছিলেন রনির বাবা বিল্লাল পাটোয়ারী।
রনির মা সালমা বেগম বলেন, ‘নানা প্রান্ত থেকে অর্ডার আসছে। কিন্তু সুতা, নাটাই, কাঠের ফ্রেম, সিজার, কেচিসহ নানা যন্ত্রপাতি দিয়ে একা হাতে সামলাচ্ছেন রনি। এক একটি জামদানি তৈরি করতে তার ৩-৪ দিন সময় লেগে যায়। যদি সামর্থ্যবানরা এগিয়ে আসে তাহলে রনির এখানে আরও অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। শাড়িও বেশি বানানো যায়।’
রনির ভাবনাও তেমনই। এ কাজে আরও অনেকের কর্মসংস্থান তৈরির প্রত্যাশা রয়েছে এই তরুণ উদ্যোক্তার। এজন্য তার চাই সরকারি-বেসরকারি সহায়তা।
রনি পাটোয়ারী বলেন, ‘আমার তৈরি এক-একটি জামদানি শাড়ির মূল্য ৩৭০০ থেকে ৮ হাজার টাকা। তবে যে কারো চাহিদানুযায়ী অর্ডার পেলে ৪-৫ লাখ টাকা দামের জামদানি শাড়ি তৈরিতেও আমি পারদর্শী। আমার এ কাজ এগিয়ে নিতে সবার দোয়া চাই।’
এ বিষয়ে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার দক্ষিণ আলগী দূর্গাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সর্দার আব্দুল জলিল বলেন, ‘রনির জামদানি শাড়ির এই ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানকে অনেক বড় করতে আমার পরিষদ থেকে সহায়তা থাকবে। আমি চাই এই শিল্প প্রতিষ্ঠান এগিয়ে যাক।’
হাইমচরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা বলেন, প্রশাসনিক বিভিন্ন মেলায় এই জামদানি শাড়ি তুলে ধরা হবে। এ শিল্পকে ছড়িয়ে দিতে রনির তৎপরতাকে ঘিরে আরও ব্যাপকভাবে কর্মপরিকল্পনা নেয়া হবে। তার যেকোনো সহায়তায় উপজেলা প্রশাসন পাশে থাকবে।’