ডার্ক মোড
Friday, 19 April 2024
ePaper   
Logo
কুমিল্লায় শতাধিক মাল্টিপারপাস ১০ বছরেও গ্রাহকের পাওনা বুঝে দেয়নি

কুমিল্লায় শতাধিক মাল্টিপারপাস ১০ বছরেও গ্রাহকের পাওনা বুঝে দেয়নি

লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

কুমিল্লা দক্ষিনাঞ্চলের লাকসাম, লালমাই, নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার কয়েক হাজার গ্রাহকের কয়েকশ কোটি টাকা বিগত ১০ বছর পার হলেও বুঝে না দিয়ে আত্মসাৎ করে শতাধিক মাল্টিপারপাসের কর্মকর্তারা উধাও হয়ে পড়েছে।

সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ৪ উপজেলার বিভিন্নস্থানে যত্রতত্র ভাবে গজিয়ে উঠা মাল্টিপারপাস কর্মকর্তাদের বিপুল অর্থ আত্মসাতের ফলে কয়েক হাজার পরিবার সর্বশান্ত হয়ে পথে বসে মানবেতর দিন যাপন করছে।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, জেলা দক্ষিনাঞ্চচলের ৪ উপজেলার কোন সরকারী কিংবা বে-সরকারী পরিসংখ্যানে ভোক্তভোগী ও ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহক কিংবা বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা নিরুপন করা আজও সম্ভব হয়নি।

বিগত ১০ বছর যাবত এ অঞ্চলে সমবায় সমিতি পরিচালনায় সরকারী নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে জেলা সমবায় অফিসার- জেলা নিবন্ধকসহ কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ঐসব লাপাত্তা মাল্টিপারপাসগুলোর সাথে বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত।

ওইসব মাল্টিপারপাসে বিনিয়োগকারী হাজার হাজার গ্রাহক যখন প্রতিনিয়ত এলাকার বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা মাল্টিপারপাসের শাখা অফিসে হন্যে হয়ে ঘুরছেন, বেশ কিছু আর্থিক সমবায় প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা তাদের নিজস্ব অর্থ দিয়ে মাল্টিপারপাসের নামে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে বিভিন্ন বিনিয়োগের নামে লোভনীয় অফারে এ ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে আসছিল।

কিন্তু মাল্টিপারপাস নামক প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর বৈধ কোন কাগজপত্র নেই। এসব কিছুর মনিটরিংয়ে জেলা নিবন্ধক-জেলা সমবায় অফিসারের দায়িত্ব অতি মূখ্য হলেও রহস্যজনক কারনে তারা নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

সূত্রগুলো আরও জানায়, জেলা দক্ষিনাঞ্চলের লাকসাম,লালমাই,নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা জুড়ে ঐসব অবৈধ অর্থ লেনদেনকারী মাল্টিপারপাসগুলো বিগত ১০ বছর পূর্বে অজ্ঞাত কারণে বিনিয়োগকারী হাজার হাজার গ্রাহকের আমানতকৃত টাকার লভ্যাংশ দেয়া বন্ধ করে দিলে উপজেলা ৪টি জুড়ে শুরু হয় ব্যাপক তোলপাড়।

ঐসব বিনিয়োগকারী গ্রাহকদের লভ্যাংশের টাকা না দিয়ে ৪ উপজেলার বড় বড় মাল্টিপারপাস প্রতিষ্ঠান নামে শতাধিক প্রতিষ্ঠান অফিস বন্ধ করে তালা ঝুলিয়ে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যায়।

এদিকে বড় প্রতিষ্ঠান গুলোর মাঝে এফআইসিএল, সেবা হাউজিং, প্রিভেইল গ্রুপ, শাহজালাল মাল্টিপারপাস, আরসিএল, আলোড়ন মাল্টিপারপাস ও পপুলার গ্রুপ বন্ধ করে বিনিয়োগ ও আমানতকারী গ্রাহকের শত শত কোটি টাকা আত্মসাৎতের অভিযোগে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহকগণ হামলা-ভাংচুর করে এবং আমানত সংগ্রহকারী পরিচালক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে থানা এবং আদালতে মামলা দায়ের করলেও বিগত ১০ বছর যাবত স্থানীয় প্রভাবশালী গ্রাহকরা কোনো কোনো মাল্টিপারপাসের অধীনে থাকা বাড়ী, জায়গা, পরিবহন ও প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীক ঋণ গ্রহিতাদের ব্লাক সমন্বয় ও অফিস দখল করে তাদের সম্পদ কিংবা জমাকৃত বিনিয়োগের টাকা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করে আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে সফল হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিফল হয়েছেন ঐসব চক্রের সদস্যরা।

এ ব্যাপারে জেলা-উপজেলা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা রাজনৈতিক ভাবে চাপে আছি। ইচ্ছা থাকা স্বত্ত্বেও কোন কাজ করতে পারছি না।

ইতিমধ্যে উপজেলা ৪টির বন্ধ হওয়া অভিযুক্ত মাল্টিপারপাস গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটকে পত্র দেওয়া হয়েছে, প্রশাসনিক সহযোগীতা না পাওয়ায় ওইসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা যাচ্ছে না।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন